ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাটি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে নিহত বর মো. জামাল ফকিরের (২৮) নামে এক যুবকের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ধুমধাম করে বরযাত্রী নিয়ে কনেকে আনা হয় বরের বাড়িতে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে নবদম্পতিকে পাঠানো হয় বাসরঘরে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- সকালে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ পাওয়া যায়। গতকাল শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি পিসনাইল গ্রামের মো রোজব ফকিরের ছেলে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জামাল ছিলেন সেজো। তবে বরের এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি, জামাল গলায় গামছা পেঁচিয়ে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আঁড়ার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আর স্থানীয়রা বলছেন, আখক্ষেতের বেড়ার ওই বাঁশের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব। বরের পরিবার জানায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পারিবারিকভাবে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. লিটন ভূঁইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তারকে (২৩) বিয়ে করেন জামাল ফকির। বিকেলে কনেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন বর। রাতে নবদম্পতির বাসর হয়। পরদিন সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় বর জামালের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় কৃষকরা। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন। স্থানীয়রা জানান, গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশে যেভাবে লাশ ঝুলে ছিল, তাতে আত্মহত্যা বলে মনে হয় না। বাঁশের উচ্চতা ছিল খুব নিচু, ফলে সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করা সম্ভব নয়। নিহত বরের স্ত্রী রোকেয়া বলেন, সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গেলে দেখি দরজার বাইরে শিকল লাগানো। পরে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দিলে দেখি আমার স্বামীর লাশ জমির মধ্যে পড়ে আছে। নিহতের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। সে কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা করেনি। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না। সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার ওই ছেলেটি বিয়ে করেন। রাতে বাসর হয়। পরদিন সকালে বাড়ির পাশে আখক্ষেতে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা হতে পারে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata